গাজায় যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানাল জামাআতে ইসলামী হিন্দ

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে স্বাগত জানালেন জামাআতে ইসলামী হিন্দের সর্বভারতীয় সভাপতি সাইয়েদ সা’দাতুল্লাহ হোসায়েনি। দীর্ঘ ১৫ মাস পর হামাসের সঙ্গে ইসরাইলের চুক্তি প্রসঙ্গে শনিবার এক প্রেস বিবৃতিতে তিনি বলেন, গাজা উপত্যকায় অবিরাম রক্তক্ষরণ বন্ধের লক্ষ্যে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এতে করে নিজভূমে পরবাসী হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করা গাজাবাসীর কাছে ত্রাণ ও অন্যান্য সাহায্য পৌঁছানো সহজ হবে। তারা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ইসরাইলের পাশবিকতা, বর্বরতা ও গণহত্যার শিকার হয়ে আসছে।

অতএব যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজাবাসীর জন্য মানবিক সহায়তা ও পুনর্বাসনে অবিলম্বে আন্তর্জাতিক মহলকে একযোগে পদক্ষেপের আহ্বান জানান আমীরে জামাআত। একই সঙ্গে ফিলিস্তিন তথা মধ্যপ্রাচ্য থেকে সমস্ত ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহারের দাবিও জানান। সর্বোপরি মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি ফিরিয়ে ফিলিস্তিনি নাগরিকদের মৌলিক মানবীয় অধিকার সুরক্ষিত করতে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক মহলকে জোরালো আহ্বান জানান তিনি।

ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে নিজেদের জীবন দিয়ে তারা যে সাহস, দেশপ্রেম, ত্যাগ ও কুরবানীর নজির রেখেছে, সেজন্য শহিদদের রক্ত বৃথা যাবে না। রাষ্ট্রসংঘ এবং বিশেষ করে আমেরিকা, ইউরোপের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, মনে রাখতে হবে, দীর্ঘ ১৫ মাস ধরে ফিলিস্তিনিরা ইসরাইলের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বলি হয়েছেন। এই অসম যুদ্ধে ইতিমধ্যেই অন্তত ৪৮ হাজার ফিলিস্তিনির প্রাণহানি হয়েছে। যাদের অধিকাংশই নিরীহ ও নিরস্ত্র সাধারণ মানুষ এবং নারী ও শিশু।

এছাড়াও ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক, সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী, বিভিন্ন পেশার মানুষ, এমনকী রাষ্ট্রসংঘের নানান শাখা সংস্থার কর্মচারী ও অফিসার, ত্রাণকর্মী ইসরাইলের পাশবিক হামলা এবং বোমা থেকে রেহাই পায়নি। গাজার অধিকাংশ স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, আদালত, সরকারি অফিস, মসজিদ সবই ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। তাঁর কথায়, গাজায় ইসরাইলি নৃশংসতা তথাকথিত বিশ্ব সভ্যতার বুকের ওপর দগদগে ক্ষত সৃষ্টি করেছে, যা একবিংশ শতাব্দীর ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছে।

সাদাতুল্লাহ হোসায়েনি আক্ষেপ করে বলেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে বুধবার কাতারে আলোচনা যখন একেবারে শেষলগ্নে, সেই সময়েও গাজায় সামরিক হামলা চালিয়ে ২১ শিশু ও ২৫ মহিলা সহ ৮৭ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এর থেকে নিষ্ঠুরতা ও অমানবিকতা আর কী হতে পারে? একথা অনস্বীকার্য যে, আন্তর্জাতিক আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দীর্ঘ সাড়ে সাত দশক ধরে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে এবং মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক দেশে ইসরাইল যেভাবে ন্যক্কারজনক আগ্রাসন ও সম্প্রসারণবাদী উচ্চাকাঙ্খা পূরণে স্পর্ধা দেখাচ্ছে, তা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকি।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে জামাআতে ইসলামী হিন্দের দাবি হল, ইসরাইলকে রাষ্ট্রসংঘের আইন, সনদ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী করা হোক। গাজা উপত্যকায় সর্বাত্মক ধ্বংসলীলার জন্য দায়ী ইসরাইলের শীর্ষ রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্বকে বিচারের কাঠগড়ায় তুলতে হবে। কারণ, তারা এই নরমেধযজ্ঞের জন্য এতটুকু অনুতপ্ত নয়, উল্টে গর্ববোধ করে থাকে।

তিনি এও বলেন, যুদ্ধবিরতিই শেষ কথা নয়। স্থায়ী শান্তির লক্ষ্যে ইসরাইলের গাজোয়ারি, মজলুম ফিলিস্তিনিদের ওপর জুলুম, নির্যাতন এবং অবৈধ আগ্রাসনকে চিরতরে নির্মূল করতে হবে। একইসঙ্গে স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে সদর্থক পদক্ষেপ করতে হবে – এটাই জামাআতে ইসলামীর নীতি ও দাবি। ফিলিস্তিনিদের জন্য ইনসাফ, প্রবাসী ও শরণার্থীদের স্বভূমে ফেরার অধিকার সুনিশ্চিত করা এবং পবিত্র মসজিদুল আকসা ও আল-কুদসকে পুরোপুরি মুক্ত করার মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি ফিরতে পারে বলে উল্লেখ করেন জামাআতে ইসলামীর সর্বভারতীয় সভাপতি।

উপসংহারে তিনি বলেন, এই মৌলিক সমস্যাগুলি সমাধানের জন্য ইতিবাচক পদক্ষেপ করতে এবং সবার জন্য শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতার পথ প্রশস্ত করতে আমরা বিশ্ব সম্প্রদায়কে আহ্বান জানাই।

আরো পড়ুন

কার্যকলাপ

বিস্তারিত পড়ুন

পলিসি

বিস্তারিত পড়ুন

রেজুলেশন

বিস্তারিত পড়ুন

আরো পড়ুন

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে স্বাগত জানালেন জামাআতে ইসলামী হিন্দের সর্বভারতীয় সভাপতি সাইয়েদ সা’দাতুল্লাহ হোসায়েনি। দীর্ঘ ১৫ মাস পর হামাসের সঙ্গে ইসরাইলের চুক্তি প্রসঙ্গে

দেশ তথা জাতির উন্নয়নে কর্মীদের সদার্থক ভূমিকা পালনের লক্ষ্যে মালদায় জামাআতে ইসলামী হিন্দের কর্মী প্রশিক্ষন শিবির ২০/০৮/২০২৩ : দেশ তথা জাতি উন্নয়নের ক্ষেত্রে দক্ষ

Ref: jihwb-med/23 Date: 09/07/23   প্রেস বিজ্ঞপ্তি   রাজ্যজুড়ে সহিংসতা রুখতে প্রশাসনকে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করার আহ্বান জামাআতের।   পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে