দর্শন

- জামাআতে ইসলামী হিন্দ সুসংগঠিত একটি সংগঠন। সংগঠন তার দর্শন ও আদর্শ ইসলামের তিনটি মৌলিক ধারণা থেকে গ্রহণ করেছে : একত্ববাদ, স্রষ্টার সার্বভৌমত্ব, নবুওয়াত এবং মৃত্যু পরবর্তী জীবন।
- এক স্রষ্টার অস্তিত্বে বিশ্বাসই হচ্ছে ইসলামের প্রথম ও প্রধান বিষয়। স্রষ্টাই সমগ্র বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টিকর্তা এবং এখানকার সমস্ত জিনিসের তিনিই একমাত্র স্রষ্টা ও পালনকর্তা।
- ইসলাম দাবি করে যে, মনুষ্য জাতি পৃথিবীতে স্রষ্টার প্রতিনিধি (খলিফা)। তারা এখানে জীবনের সকল ক্ষেত্রে মহান স্রষ্টা প্রদত্ত জীবন বিধানের অনুসরণ ও ই বাদত-বন্দেগী করতে বাধ্য।
- স্রষ্টা তাঁর রাসূলদের (বার্তাবাহকদের) মনুষ্য জাতির কাছে সত্য দ্বীন তুলে ধরার জন্য প্রেরণ করেছে। তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দেশ ,এলাকায় এসেছেন ইসলামের সুমহান বার্তা প্রচার ও অনুসরণের জন্য। নবী মুহাম্মাদ ( স:) হলেন এই রিসালাত ধারার সর্বশেষ বার্তা বাহক। তিনি স্রষ্টার সর্বশেষ অবতীর্ণকৃত বাণী - কুরআন মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছেন। নবী মুহাম্মাদ ( স:) তাঁর ব্যবহারিক জীবন ও সুন্নাহর মধ্য দিয়ে ইসলামের নমুনা ও আদর্শ জনগণের মধ্যে তুলে ধরেছেন। উল্লেখ্য যে, সুন্নাহ হচ্ছে - ইসলামী ইসলামকে জানার জন্য - কুরআনের পরই দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ উৎস।
- স্রষ্টার একত্ববাদের ধারণা থেকেই মনুষ্য জাতির একতার ধারণা তৈরি হয়। ইসলামের দৃষ্টিতে সকল মানুষ আদম এবং হাওয়ার উত্তরসূরী।কেউই অন্যের তুলনায় জন্ম, বর্ণ, গোত্র, রং, জাতীয়তা, সম্প্রদায় অথবা ভাষার দিক দিয়ে শ্রেষ্ঠ ও উৎকর্ষ নয়। মানুষের মর্যাদা শুধু ব্যক্তির তাকওয়া, সদাচারণ এবং এক স্রষ্টার আনুগত্যের মধ্যেই নিহিত আছে।
- ইসলামের বার্তা বা বাণী বিশ্বজনীন। সমগ্র মনুষ্য জাতির জন্য - কোনও বিশেষ একটি সম্প্রদায়ের জন্য নয়। মুসলিম শব্দটি প্রত্যেক ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য - যে বাজেনি স্রষ্টার ইচ্ছার কাছে আত্মসমর্পণ করে নিজেকে । সর্বোপরি সে ইসলামের ঐশী পথনির্দেশনা তার সমগ্র জীবনে অনুসরণ করে।
- ইসলাম নবী-রাসূলদের মাধ্যমে প্রদর্শিত পথ ছাড়া অন্য কিছু নয়। এটা তুলে ধরে জীবন সম্পর্কে ভারসাম্যপূর্ণ ও সুসংহত দৃষ্টিভঙ্গি। এটা জীবনের সকল দিক ও বিভাগে ব্যাপৃত ও আচ্ছাদিত - আধ্যাত্বিক এবং বস্তুগত উভয় জগতই। মানুষের উচিত তাদের ব্যক্তিগত এবং সমষ্টিগত জীবনের সকল ক্ষেত্রে এই পথকে অনুসরণ করা।
- ইসলামী দৃষ্টিকোণে, বস্তুগত এই দুনিয়ায় জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে না। মনুষ্য জাতি তাদের কৃতকর্মের ফল মৃত্যু পরবর্তী জীবনে দেখতে পাবে। নারী এবং পুরুষের ভাল এবং মন্দ যেকোনও পথ বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা রয়েছে। যারা এক স্রষ্টার অস্তিত্বে বিশ্বাস স্থাপন করবে এবং নিজেদের জীবন ঐশী দিকনির্দেশনা অনুসারে সাজাবে - তারা ইহকাল এবং পরকাল উভয় জগতে প্রকৃত সফলতা অর্জন করবে।
- সৃষ্টিকর্তা প্রত্যেক মানুষকে স্বাধীন ইচ্ছা, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দিয়েছেন এবং এর মাধ্যমে তিনি মানুষকে পরীক্ষায় ফেলেছেন। সুতরাং ধর্ম ও বিশ্বাসের বিষয়ে কোনও জোর জবরদস্তি ও বল প্রয়োগের জায়গা নেই। যারা মন্দ ও অবিশ্বাসের পথ বেছে নেবে তারা স্রষ্টার দ্বারা শাস্তিপ্রাপ্ত হবেন!
- ইসলাম মানব জীবন এবং অস্তিত্বের উপরে যথেষ্ট মূল্য ও গুরুত্ব আরোপ করেছে। কুরআনের ভাষ্য অনুসারে, ভুল ও ইচ্ছাকৃতভাবে কোনও একজন মানুষকে হত্যা করার মানে সমগ্র মানবজাতিকে হত্যা করার সমান বলে আখ্যায়িত করেছে।
- ইসলামের মূল্যবোধসমূহের প্রতি যথাযথ মর্যাদা জানিয়ে জামাআতে ইসলামী হিন্দ (JIH) শান্তিপূর্ণ উপায়ে ইসলামের বার্তা, বাণী ভারতীয়দের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করছে।
- ইসলামের শিক্ষা এবং বর্তমান মুসলিম সম্প্রদায়ের আচার-আচরণ, অনুশীলন-চর্চায় বিস্তর ফারাক রয়েছে। জামাআতে ইসলামী হিন্দ (JIH) এমন একটি মুসলিম সমাজ গড়তে চায় - যেখানে ইসলামের মূল্যবোধ ও বিশ্বাসের জীবন্ত নমুনা বিচ্ছুরিত ও প্রস্ফুটিত হবে।
- জামাআতে ইসলামী হিন্দ (JIH) শান্তি-শৃঙ্খলা, সহিষ্ণুতা এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাস করে। এ ছাড়াও, জামাআত সব সময় হিংসা-বিদ্বেষ, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়।
- জামাআতে ইসলামী হিন্দ (JIH) সামাজিক সুবিচারের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। অন্যদিকে, সংগঠন ভারতীয় সমাজের নির্যাতিত ও বঞ্চিত শ্রেণি গোষ্ঠীর কল্যানে গঠনমূলক কাজ করে যাচ্ছে।
- জামাআতে ইসলামী হিন্দ (JIH) দৃঢ়তার সাথে বিশ্বাস করে যে, একটি আদর্শ সমাজ গঠনে মহিলাদের ভূমিকা পুরুষের মতই সমান ও গুরুত্বপূর্ন। পূর্বে বর্ণিত বিশ্বাস মাথায় রেখে,জামাআতে ইসলামী হিন্দ (JIH) সংগঠনের বিভিন্ন কর্মসূচী ও কাজে - ইসলামের শিক্ষানুসারে, মেয়েদের অংশগ্রহণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। নবী মুহাম্মাদ (সা:) ঘোষণা করেছেন যে শিক্ষা অর্জন করা প্রত্যেক নর-নারীর জন্য আবশ্যিক কর্তব্য করণীয়।
- জামাআতে ইসলামী হিন্দ (JIH) লিঙ্গ ভেদে বেইনসাফি, বর্তমান সমাজে বিভিন্ন নারীবিদ্বেষী কাজ যেমন নারীদের গালিগালাজ করা, যৌন অপরাধ, বিভিন্ন ধরনের হয়রানি, পণপ্রথা, গার্হস্থ্য জীবনের হিংসা, যুলুম, উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিতসহ বিভিন্ন বিষয়ে অনুৎসাহিত করা হচ্ছে। জমাআত এ বিষয়ে ইসলামী ভাবধারা অনুসারে গঠনমূলক কাজ করে যাওয়ার চেষ্টা করছে।
আরো পড়ুন


আমাদের দর্শন
বিস্তারিত পড়ুন

কার্যকলাপ
বিস্তারিত পড়ুন

পলিসি
বিস্তারিত পড়ুন

রেজুলেশন
বিস্তারিত পড়ুন